ঘরে বসে অনলাইনে আয় করার ১০ উপায়
অনেকভাবে অনলাইনে আয় করা যায় । এ বিষয়ে অভিজ্ঞদের পরামর্শ হচ্ছে- আপনি যে কাজটা ভালো পারেন সেটি খুব ভালো করে শিখে নিন।কিন্তু দক্ষ না হয়ে কাজ শুরু করলে আপনি বেশিদূর যেতে পারবেন না । যদি আপনি আপনার শখকে অনলাইনে অর্থ উপার্জনের একটা মাধ্যমে পরিনত করতে চান তাহলে এই দশটি আইডিয়া নিঃসন্দেহে আপনাকে সাহায্য করবে।
ফ্রিল্যান্সার ইিসেবে নিজের দক্ষতা দিয়ে উপার্জন
অনলাইনে ইনকামের আরেকটি জনপ্রিয় উপায় হল ফ্রিল্যান্সিং। একজন ফ্রিল্যান্সার অস্থায়ী ভাবে বিশ্বের নানা প্রান্তের বিভিন্ন ছোট/বড় সংস্থাগুলির সাথে কাজ করে তাদেরকে বিভিন্ন সার্ভিস দিতে পারে।
এই সার্ভিসগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো এস ই ও, গ্রাফিক ডিজাইন, ওয়েব সাইট ডিজাইন, কন্টেন্ট রাইটার, ডাটা এন্টি,এপস ডেভেলপমেন্ট এর মতো আরো কিছু কাজ।
একজন দক্ষ ফ্রিল্যান্সার হিসাবে মাসে প্রায় $৫০০ থেকে $৫০০০+ পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
ফ্রিল্যান্সার হিসাবে কাজ করার জন্য ফিভার,ফ্রিল্যান্সার ডট কম, আপ ওয়ার্ক, পিপল পার আওয়ার এর মতো কিছু ফ্রিল্যান্সিং সাইট আছে যার যেকোন এক বা একাধিক সাইটে সাইনআপ করে কাজ শুরু করা যাবে।তবে এইক্ষেত্রে একটা প্রয়োজনীয় কথা মানা উচিত তা হলো কোন একটা কাজে দক্ষ হওয়ার পরই এই মাধ্যমে কাজ শুরু করা ভালো সফল হওয়ার জন্য।কিন্তু দক্ষ না হয়ে কাজ শুরু করলে আপনি বেশিদূর যেতে পারবেন না
লেখালেখি করার দক্ষতাকে উপার্জনে পরিনত করা (ব্লগিং করা)
একজন ব্লগার লেখালেখি করে সম্মানজনক উপায়ে ফ্রিল্যান্সিং করে উপার্জন করতে পারে । এই ক্ষেত্রে তার কোনো ধরনের পন্য বিক্রি বা কোনো ধরনের মার্কেটিং করতে হয় না শুধু মাত্র তার লেখাকে সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করতে হয় পাঠকদের সামনে।
মূল কথা হলো, নিজের পছন্দের কোনো বিষয়ের প্রতি লেখার আগ্রহ থেকেই ভালো কিছু লেখার ইচ্ছে তৈরী হয় এই মাধ্যমে যেটা সবার কাছে ব্লগিং নামে পরিচিত।
ব্লগে ভিজিটরদের সংখ্যা বাড়িয়েও আয়ের বেশ ভালো সুযোগ আছে এই মাধ্যমে।
নিজের ব্লগ বা সাইটের মাধ্যমে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং
এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং হলো পন্য প্রচার বা মার্কেটিং এর একটি সহজ মাধ্যম।
ব্লগের ভিজিটর যদি সবসময় বাড়তে থাকে তাহলে সেই ব্লগে পন্যের মার্কেটিং করে কমিশনের মাধ্যমে একটা ভালো মানের অর্থ উপার্জন করা সম্ভব নিজস্ব ব্লগ বা সাইট থেকে ।
এই ক্ষেত্রে কিছু বিষয় খেয়াল রাখা উচিত-
যে বিষয়ে ব্লগ লিখছেন সেই লেখার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন কোনো পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া সাইট ভিজিটরদের রুচির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ন পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া ভালো মানের নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের বিজ্ঞাপন দেওয়া।এছাড়া আরও কয়েকটি উপায়ে এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করা যায় । আপনি এখানে ফ্রি এবং পেইড বা অর্থ খরচ করেও এ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং করতে পারবেন ।
২০১৯ সালে র্যাঙ্কিং এ শীর্ষে থাকা কিছু এ্যাফিলিয়েট মার্কেটপ্লেসের নাম হলো-
ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে প্রোডাক্ট সেল করা
ই–কমার্স হলো এমন একটি সাইট যার মাধ্যমে প্রোডাক্ট অনলাইনের আগ্রহী কাস্টমারদের কাছে খুব সহজেই নিয়ে যাওয়া যায়। দিন দিন বাড়ছে এই সাইটগুলোর গ্রহনযোগ্যতা।
আর এই সাইটগুলোর মাধ্যমে নিজের প্রোডাক্ট সেল করে উপার্জন করছে অনেকে।
এমন কিছু সাইট হলো
Amazon,Ebay,ও Aliexpress।
এই অনলাইন প্লাটফর্মগুলো এখন প্রতিনিয়ত স্বয়ংক্রিয়ভাবে স্টোর প্রতিষ্ঠা, লেনদেন ও প্রোডাক্ট প্রদর্শন করে থাকে ।
এছাড়াও আরো অনেক ধরনের মার্কেটিং ও ক্রেতা বাড়ানোর পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো সাফল্যের সাথে অনলাইনে ক্রেতা ও বিক্রেতা নিয়ে লাভজনকভাবে কাজ করছে।
ডিজিটাল বই পাবলিশ, ডাউনলোড ও সেল করা
যারা শব্দের জাদুকর তাদের জন্য একটা উপযুক্ত মাধ্যম হলো অনলাইনে নিজের বই পাবলিশ করা।
এখন আর সেই যুগ নেই যে কিছু খেয়ালী পাবলিশারের কারনে লেখক হিসেবে নিজের আত্ন সম্মান বিসর্জন দিতে হবে। Amazon Kindle এখন দ্রততার সাথে নিজস্ব বই পাবলিশ করার সুযোগ দিয়েছে।
এই সুযোগ শুধু যে উচ্চমানের কিছু লেখকদের জন্য তা না বরং যাদের মহৎ পরিকল্পনা বা চিন্তা নিজস্ব লেখনির মাধ্যমে অন্যদের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে তাদের জন্য ও এই পদ্ধতি বেশ লাভজনক। আর তাই অনলাইনে পাঠক নন্দিত বই পাবলিশ করে ও সেল করে একটি ভালো মানের উপার্জন সম্ভব ।
অনলাইনে কোর্স সেল করা
সবারই কোনো না কোনো ক্ষেত্রে পারদর্শীতা থাকে। অনলাইনে শিক্ষা দান এমন একটি দক্ষতা যা উপযুক্ত উপায়ে অন্যকে উপার্জনে যোগ্য করে তুলে।
এটাকে বলা হয় মাপযোগ্য অনলাইন মাধ্যম।
এই ক্ষেত্রে কোনো বিষয়ে অভিজ্ঞ হবার চেয়ে কোনো কিছু বোঝানোর আর্ট বা দক্ষতা থাকা বেশি প্রয়োজন। এই ধরনের কোর্সগুলো দেশের বাইরে খুব জনপ্রিয় ।এমন কিছু উল্লেখযোগ্য কোর্স হলো-
“Web Development“
“Graphic Design”
“Digital Marketing”
অনেক গুলো অনলাইন প্লাটফর্ম অনলাইন কোর্সের সেবা দিয়ে থাকে যেমন ঃ
তবে অসাধু কোর্স বিক্রেতাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন ।
পরামর্শ বা প্রশিক্ষণ দেওয়া
পরামর্শ বা প্রশিক্ষণ দেওয়া ।নিজের দক্ষতার বিষয়ে পরামর্শ বা প্রশিক্ষণ দিয়েও অনলাইনে অর্থ উপার্জন করা যায়।
বর্তমানে ১:১ ভিডিও সেশনের মাধ্যমে ভার্চুয়াল ভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব। ডিজিটাল যুগে যদি নিজের কোনো দক্ষতা থাকে যা অন্য সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে নিশ্চিতভাবে সেই দক্ষতা দিয়ে উপার্জন করা সম্ভব।
ইউটিউবার বা ভ্লগ (ভিডিও ) তৈরী করা
যারা সবার নজরের মধ্যমনি হয়ে থাকতে চায় তাদের জন্য এই মাধ্যম হলো সবচেয়ে উপযুক্ত।
নিজের একটা ইউটিউব চ্যানেল বা ভ্লগ হতে পারে উপার্জনের একটি বাড়তি মাধ্যম। নিজের মতো করে লেখালেখি করা বা অনলাইনে প্রোডাক্ট সেল করা বা ডিজিটাল উপায়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া এইসব কিছু থেকে একটু ভিন্ন হলো এই ক্যামেরার মাধ্যম। এটা এখন একটি যুগোপযোগী মাধ্যম।
আর সেজন্যই ইউটিউব দর্শকদের সংখ্যা ফেসবুক ব্যবহারকারীদের সংখ্যার সাথে পাল্লা দিয়ে দিন দিন শুধু বাড়ছে। তাই কেউ যদি এমন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন হয়ে থাকে যে অনলাইনে তার উপস্থাপন সকলের উপভোগ্য তাহলে তার জন্য ইউটিউব একটি যোগ্য মাধ্যম।
ভার্চুয়াল এ্যাসিসটেন্ট হিসেবে কাজ করা
স্বশরীরে উপস্থিত না থেকেও ডিজিটাল এই যুগে একজন ভার্চুয়াল এ্যাসিসটেন্ট হিসেবে অনলাইনে কাজ করা যায়।
একজন ভার্চুয়াল এসিস্টেন্ট এর কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো ওয়েবসাইট মনিটরিং, কন্টেন্ট লেখা, প্রুফরিডিং, পাবলিশিং, মার্কেটিং, কোডিং, ওয়েবসাইট এবং অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, ওয়েব রিসার্চ, স্যোসাল মিডিয়া মার্কেটিং সহ আরও অনেক ধরনের কাজ।
আর এই কাজগুলো করার জন্য রয়েছে কিছু বিশ্বস্ত ওয়েবসাইট যা পেমেন্ট দিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে যেমন MyTasker, uAssistMe, 123Employee etc।
এই সাইটগুলো তে কাজ করে একটি সম্মান জনক উপার্জন সম্ভব।
অনলাইনে ছবি বিক্রি করা
ছবি তোলা যদি আপনার নেশা হয়ে থাকে তাহলে আপনার জন্য রয়েছে এমন কিছু সাইট সেখানে ছবি বিক্রি করেই মাসে হাজার ডলার ইনকাম করা যায় ।
ল্যান্ডস্কেপ বা পোর্টেইট বা নিজের তোলা যেকোনো হাই রেজুলেশনের দৃষ্টিনন্দন ছবি হতে পারে আপনার উপার্জনের একটি সুন্দর মাধ্যম।
শাট্টারস্টক, ফোটোলিয়া, আইস্টকফটো, ফটোবিককেটের মত বড় বড় সাইটগুলি রয়েছে যেখানে আপনি আপনার তোলা ছবি জমা দিতে পারেন।
এর জন্য উল্লেখযোগ্য কিছু সাইট হলো
Adobe Stock
যখনই কোনও গ্রাহক বা সাইট ভিজিটর আপনার তোলা কোনো ছবি কিনবে, আপনি পেয়ে যাবেন ছবির নির্দিষ্ট মূল্য ।
এভাবেই অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে আপনি আপনার উপার্জনের একটি যোগ্য মাধ্যম খুজেঁ নিতে পারবেন। তবে সেইক্ষেত্রে প্রথম উপায়ে যদি আপনার প্রত্যাশিত সাফল্য না আসে তাহলে দ্বিতীয় না হয় তৃতীয় এভাবে দশটি উপায়ের যেকোন একটি দিয়ে শুরু করুন, শুরু করা টাই এখানে গুরুত্বপূর্ন দেখবেন সাফল্য অবশ্যই ধরা দিবে।
আর তাই নিজে যাচাই করে সাফল্যের প্রকৃত স্বাদ অনুভব করতে শিখুন।
লিখাটি ভালো লাগলে শেয়ার করতে ভুলবেন না ।
আমাকে পাবেন-
আমার সাথে ফেসবুকে কানেক্ট থাকুন – আমার ফেসবুক প্রোফাইল
ইউটিউবে পাবেন- ইউটিউব