পাঁচটি সহজ উপায়ে করুন এফিলিয়েট মার্কেটিং

বিশ্ব বানিজ্য এখন অনলাইন মার্কেটিং এ ঝুকছে আর তাই অনেকেই সাহস করে এগিয়ে আসছে এই অনলাইন মার্কেটিং এ। অনলাইনে যদি কেউ ইনকাম করতে চায় তবে এফিলিয়েট মার্কেটিং হতে পারে তার জন্য একটি বিশাল সুযোগ । ঘরে বসে বাড়তি ইনকাম বা একমাত্র ইনকামের উৎস হতে পারে এই এইফিলিয়েট মার্কেটিং আর তার জন্য বিশাল পান্ডিত্যের অধিকারী হতে হবে না বরং স্কিল ডেভেলপ করে নিজের সুবিধা মতো সময়ে স্বাধীনভাবে মার্কেটিং এর কাজ করে আয় করা যাবে একজন মার্কেটার হিসেবে।

যারা একদমই নতুন বা এখনো জানেন না এই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর ব্যাপারে কিন্তু অনলাইন মার্কেটিং এ আগ্রহী  তাদের জন্য একটি সঠিক দিক নির্দেশনা হলো আজকের এই “পাঁচটি সহজ উপায়ে করুন এফিলিয়েট মার্কেটিং”আর্টিকেল।

আর তাই চলুন দেরি না করে আমরা আমাদের মূল আলোচনায় আসি।

এফিলিয়েট মার্কেটিং

এফিলিয়েট মার্কেটিং কি

 

এফিলিয়েট মার্কেটিং হচ্ছে কমিশন নির্ভর একটি বিজনেস আইডিয়া যেখানে অন্য কোনো কোম্পানির প্রোডাক্ট বা সার্ভিস বিক্রি করে একটি নির্দিষ্ট পরিমান কমিশন পাওয়া যায়।এই সিস্টেমে তিন ধরনের পার্টি থাকে – একজন মার্চেন্ট বা বিজ্ঞাপন দাতা, একজন এফিলিয়েট মার্কেটার ও একজন কাস্টমার। যত বেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর আসবে এফিলিয়েট মার্কেটে  তত বেশি প্রোডাক্ট  সেল হবার সম্ভাবনা বাড়বে ও কমিশন পাওয়া যাবে।

Amazon, Alibaba Themeforest, ebey সহ প্রায় সব বড় বড় কম্পানি এফিলিয়েট কমিশান দিয়ে থাকে। তবে সবচেয়ে জনপ্রিয় হচ্ছে Amazon affiliate.

এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য রয়েছে বিভিন্ন মাধ্যম  যেমন –

ওয়েব সাইট

ইউটিউব

সোশ্যাল মিডিয়া সাইট

তবে সবচেয়ে স্থায়ী এবং ভাল মাধ্যম হচ্ছে ওয়েব সাইট। তবে এই এফিলিয়েট মার্কেটিং এর জন্য কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে। যেমন কারো নিশ বা মার্কেট এর বিষয়বস্তু যদি হয় ফ্রিল্যান্সিং কোর্স তবে  সাইটের ডোমেইন নেম থেকে শুরু করে কন্টেট সহ সব সেই ভাবে সাজাতে হবে।

 

কেন এফিলিয়েট মার্কেটিং করবেন?

এফিলিয়েট মার্কেটিং একটি স্মার্ট এবং আধুনিক পেশা। এই পেশার কিছু নিজস্বতা রয়েছে যার জন্য এটি  অনলাইনের অন্যান্য কাজ থেকে আলাদা। যেমন :

১.এফিলিয়েট মার্কেটিং এ অন্যের পণ্য বিক্রি করে আয় করা যায় ।

২. পছন্দমতো পণ্য ওয়েব সাইটে দেওয়া  যায়।

৩. ঘরে বসে কাজ করা যায়।

৪. ফুলটাইম ক্যারিয়ার গড়া যায়।

৫. সময়ের স্বাধীনতা থাকে।

৬. বিভিন্ন কোম্পানির কাছে যথেষ্ট ব্র্যান্ড ভেলু  বাড়ানো যায়।

৭. এফিলিয়েট  মার্কেটিংয়ে স্বাধীন ভাবে কাজ করার সুযোগ থাকে।

৮.একটি এফিলিয়েট সাইট দিয়ে একাধিক উপায়ে ইনকাম করা সম্ভব ।

৯.সব সময় ওয়েবসাইট সাইটে একটিভ থাকার প্রয়োজন হয় না।

১০. অনলাইন ফ্রিল্যান্সিং এর জনপ্রিয় ক্রিয়েটিভ ও স্মার্ট পেশা হচ্ছে এফিলিয়েট মার্কেটিং

 

এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিষয়:

তিনটি বিষয় রয়েছে যা এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণঃ

 

১. সময়ঃ

পর্যাপ্ত সময় না দিলে  এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফল হওয়া সম্ভব  হয়না। কেননা, এফিলিয়েট মার্কেটিং একটি মাল্টি বিলিয়ন ইন্ডাস্ট্রি। একদিকে প্রতিযোগীতা অন্যদিকে প্রযুক্তির আপডেট-উভয় মিলে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করার জন্য পর্যাপ্ত সময় দেয়া খুবই প্রয়োজন।

২. কৌশলঃ

এফিলিয়েট মার্কেটিং করতে হলে অনেক বেশি কৌশলী  হতে হয়। যে যত বেশি কৌশলী সে তত সুন্দর ভাবে তার অফার প্রোমোট করতে পারবে তার কাস্টমারদের জন্য। সেজন্য একদিকে যেমন বিসনেস আপ টু ডেট থাকতে হবে  অন্যদিকে নির্দিষ্ট অডিয়েন্স থেকে পর্যাপ্ত পরিমান রিসপন্স পাবার জন্য সুকৌশলী হতে হবে এই মার্কেটপ্লেসে।

৩. বিনিয়োগঃ

অনেক সময় নির্দিষ্ট পরিমান ‍বিনিয়োগের অভাবে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ে সফলতা আসতে বেশ দেরি হয়। শুধু ফ্রি মেথডে কাজ করে আউটপুট আনতে অনেক বেশি সময় ও শ্রম দিতে হবে। কিন্তু পেইড মেথডে কাজ করলে যেমন ফেইসবুক, PPC ইত্যাদি এর মাধ্যমে পেইড মার্কেটিং করলে আউটপুটটা দ্রুত আসা সম্ভব।

কিভাবে শুরু করবেন এফিলিয়েট মার্কেটিং?

এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করতে হলেই অনেক কিছু জেনে তবেই কাজ শুরু করতে হবে যেমন, কোন প্রডাক্ট বাছাই করবো, কেন বাছাই করবো? এই প্রডাক্ট গুলো কিভাবে টার্গেটেড ট্রাফিকের উপস্থাপন করতে হবে এবং  কিভাবে প্রমোট করতে হবে ইত্যাদি।আর তাই এফিলিয়েট মার্কেটিং শুরু করার  প্রয়োজনীয় ধাপগুলো নিচে দেওয়া হলো-

 

স্টেপ ১: নিশ বাছাই করা

নিশ বাছাই করা,niche

 

এফিলেয়েট মার্কেটিং এর জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন আর প্রথম ধাপ হচ্ছে নিশ সিলেকশন।

বিজনেসের ক্ষেত্রে নিশ সিলেকশন হলো ব্যবসাটি কোন জিনিস নিয়ে করা হবে তা নির্বাচন আর একটি ওয়েবসাইটের ক্ষেত্রে নিশ হলো ওই ওয়েবসাইটের বিষয়বস্তু।

কোনো প্রোডাক্ট,ফ্রিল্যান্সিং,ব্লগিং,মার্কেটিং,ওয়েট লস,গ্রাফিক্স ডিজাইনিং,ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট,ওয়েব ডেভেলপমেন্ট ও ডিজাইনিং,ভ্রমণ,লাইফ হ্যাক,হেলথ টিপস,রান্নাবান্না,ব্যবসায়িক পরামর্শ,শেয়ার বাজার,নিউজ,ডিজিটাল মার্কেটিং,এস ই ও ওও পড়াশুনা সহ এমন

অসংখ্য নিশ রয়েছে এর মধ্যে যেকোনো একটি পছন্দের নিশ বাছাই করে শুরু করতে হবে এফিলিয়েট মার্কেটিং এর প্রাথমিক পর্ব।

 

স্টেপ ২: প্রোডাক্ট বাছাই করে ওয়েব সাইট সেট আপ করা

প্রোডাক্ট বাছাই,product selection

 

যে সমস্ত প্রোডাক্ট প্রোমোট করা হবে তা সম্পর্কে অবশ্যই ভালো মত জানতে হবে।

প্রোডাক্ট সিলেকশন হয়ে গেলে এফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের জন্য একটি ওয়েবসাইট খুলতে হবে। এই ওয়েবসাইটটি নিজেই খোলা ভালো কারন যদি নিজেই ওয়েবসাইট খুলে তবে তা হবে সর্বোচ্চ সিকিউরিটির অন্তর্ভুক্ত।

তারপর ওয়েবসাইট  সেটআপ করে নিতে হবে প্রয়োজনীয় টুলস দিয়ে।

অফার,কমিশন রেট,পেমেন্ট পদ্ধতি,পাবলিক রিভিই এই বিষয়গুলো মাথায় রেখে এফিলিয়েটের সঠিক প্রোগ্রামিং নির্বাচন করতে হবে।

 

স্টেপ ৩: এস ই ও (SEO) করে ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্কিং করানো

এস ই ও ,(SEO)

 

এস ই ও করে নিজের ওয়েবসাইট র‌্যাঙ্কিং করাতে হবে যাতে সার্চ ইঞ্জিন তথা গুগল, ইয়াহু এরকম সার্চ ইঞ্জিন থেকে ট্রাফিক বা ভিজিটর সাইটে নিয়ে আসতে পারে। আর এজন্য আপনার সাইটের আর্টিকেল বা কনটেন্ট সমূহও র‌্যাঙ্কিং করাতে হবে।

 

স্টেপ ৪: কনটেন্ট তৈরী করে সাইটে ভিজিটর নিয়ে আসা

কনটেন্ট

 

সাইটের জন্য কনটেন্ট তৈরি করা আরেকটা গুরুত্বপূর্ন ধাপ । একটি ওয়েবসাইট এর জন্য মেইন কন্টেন্ট হল আর্টিকেল বা ব্লগ পোষ্ট।যত বেশি ভালো কনটেন্ট সাইটের জন্য তৈরি করা হবে  ততবেশি ট্রাফিক বা ভিজিটর সাইটে আসবে । আর যত বেশি ভিজিটর সাইটে আসবে প্রোডাক্ট সেল তত বেশি হবে আর এফিলিয়েট কমিশন এভাবে বাড়তে থাকবে।

ইমেইল মার্কেটিংও করে সাইটে ভিজিটর নিয়ে আসা যায় ।

 

স্টেপ ৫: এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করা

এফিলিয়েট প্রোডাক্ট প্রমোট করা

 

এখন হলো সর্বশেষ গুরুত্বপূর্ন ধাপ আর তা হলো বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম এ যুক্ত হয়ে প্রোডাক্ট প্রমোট করতে হবে ।

এর জন্য বিভিন্ন অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং মার্কেটপ্লেসে যেয়ে সাইন আপ করতে হবে এবং সেখান থেকে ইউনিক এফিলিয়েট লিংক কালেক্ট করতে হবে তারপর ওই লিংকসমূহ আপনার আর্টিকেলের বিভিন্ন জায়গায় যুক্ত করতে হবে।

এরপর যখনই কোনো ট্রাফিক বা কোন ভিজিটর ওই লিংকে ক্লিক করে আপনার রেকমেন্ডেড প্রোডাক্টটি কিনবে তখনই আপনি কমিশন পেয়ে যাবেন।

 

এভাবেই এফিলিয়েট মার্কেটিং করে আপনি একটি ভালো ইনকাম করতে পারবেন। তবে এর জন্য অবশ্যই পর্যাপ্ত  সময় দেওয়া ও ধৈর্য্যশীল হওয়ার মতো মানসিকতা থাকতে হবে। আর তবেই উল্লেখিত বিষয় গুলা ভালো করে আয়ত্ত করে আপনি হতে পারবেন একজন সফল এফিলিয়েট মার্কেটার।

শুভ কামনা রইলো আপনার জন্য।

 

Arif Hossain
 

Click Here to Leave a Comment Below 0 comments

Leave a Reply:

error: Content is protected !!